৫ বছরের মধ্যে ভুট্টার উৎপাদন বছরে ১ কোটি টনে উন্নীত করা হবে-কৃষিমন্ত্রী

এসডিজি অর্জনে কৃষি

ভুট্টার উৎপাদন

কৃষি সংবাদ ডেসকঃ

ভুট্টার উৎপাদন : কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক, এমপি বলেছেন, দেশে ভুট্টা চাষের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। উন্নতজাত উদ্ভাবন হয়েছে, অনুকূল কৃষিজলবায়ু রয়েছে ও কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে যার ফলে ভুট্টার উৎপাদন বহুগুণে বাড়ানো সম্ভব। অন্যদিকে, দেশেবিদেশে ভুট্টার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দেশে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের খাদ্য হিসাবে ভুট্টা ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। সেজন্য, ভুট্টার  উৎপাদন আরও বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে ভুট্টার উৎপাদন বছরে ১ কোটি মেট্রিক টনে উন্নীত করতে কাজ চলছে। আর এটি করতে পারলে ভুট্টা উৎপাদনে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন নয়, বিদেশে রপ্তানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

কৃষিমন্ত্রী শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) রাতে আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) এবং বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিসচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম।

বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের হিসাব অনুযায়ী দেশে ভুট্টার উৎপাদন ২০০৯ সালে ছিল সাত লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০ সালে যা বেড়ে হয়েছে ৫৪ লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে, ভুট্টার চাহিদা বছরে ৬৫-৭০ লাখ টন। আর দেশে ২০২০ সালে গম  উৎপাদন হয়েছে ১২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে গমের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে, অথচ উৎপাদন খুবই কম। কিন্তু বাংলাদেশের কৃষিজলবায়ু গম চাষের খুব অনুকূল না হওয়ায় গমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সম্ভব নয়। তবে এ দেশের উপযোগী আরও উন্নত ও উৎপাদনশীল জাত নিয়ে আসতে পারলে গমের উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। চাহিদার পুরোটা না হলেও অন্তত অর্ধেক উৎপাদন করা সম্ভব। এসময় মন্ত্রী সিমিট এবং বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

সিমিটের মহাপরিচালক মার্টিন ক্রোফ বলেন, সিমিট ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। সিমিট বাংলাদেশে গম ও ভুট্টার উন্নয়নে গবেষণার মাধ্যমে উন্নত জাত উদ্ভাবন, বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং ব্লাস্ট ও ফল আর্মিওয়ার্মসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও দমনে সহায়তা আরও বাড়াবে।

 সিমিটের মহাপরিচালক মার্টিন ক্রোফ এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. এছরাইল হোসেন, সিমিটের বাংলাদেশ প্রতিনিধি টিমোথি জে. ক্রুপনিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিমিটের কর্মসূচি পরিচালক ব্রুনো জেরার্ড ও বিএম প্রসন্ন। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এমএ সাত্তার মণ্ডল।

বক্তাগণ বর্তমানে বাংলাদেশে গমের ব্লাস্ট রোগ ও ভুট্টায় ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার আক্রমণকে গম ও ভুট্টা উৎপাদনে বড় চ্যালেঞ্জ বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

সিমিট ১৯৮৩ সাল থেকে প্রায় ৩৭ বছর ধরে বাংলাদেশে গম ও ভুট্টার চাষ, উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে আসছে। বিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, জার্মপ্লাজম, উন্নত জাত উদ্ভাবন, ফসলের রোগ প্রতিরোধ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সিমিট ও বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠভাবে একসাথে কাজ করছে। সিমিট বাংলাদেশে সম্প্রতি দেখা দেওয়া গমের ব্লাস্ট রোগ এবং ভুট্টার ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার দমন ও মোকাবিলায় সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সিমিটের সদর দপ্তর মেক্সিকোতে।

Advisory Editor

Advisory Editor of http://www.krishisongbad.com/

Learn More →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *