ইফতেখার আহমেদ ফাগুন, সিকৃবি থেকে:
শিক্ষক দিবসে ঃ ৫ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যপী শিক্ষকদের সম্মান জানিয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন করা হয়। এবছর
বাংলাদেশে শিক্ষক দিবসে প্রতিবাদ কর্মসূচী করতে বাধ্য হয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
কর্তৃক প্রস্তাবিত অভিন্ন নীতিমালাকে প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন করছেন তারা। বৃহঃস্পতিবার দেশের
অন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এ নীতিমালাকে প্রত্যাখান করে
মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে বৈশাখী চত্বর পর্যন্ত এই মানববন্ধন
অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড.
মোহাম্মদ নূর হোসেন মিঞা, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. জীতেন্দ্রনাথ অধিকারী, গণতান্ত্রিক শিক্ষক
পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. মিঠু চৌধুরী, প্রফেসর ড. আব্দুল বাসেত, প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ড,
প্রফেসর ড. এ এফ এম সাইফুল ইসলাম সহ অন্যান্য শিক্ষক নেতাবৃন্দ।
শিক্ষক নেতারা অভিন্ন নীতিমালার নামে ভিন্ন ভিন্ন ভাগে বিভক্ত নীতিমালাকে একপেশে, বিদ্বেষমূলক,
বিভ্রান্তিকর, ও অসংগতিপূর্ণ বলে আখ্যা দেন। তারা আরো দাবি করেন, ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোন
শিক্ষক প্রতিনিধি না রেখেই এ নীতিমালা করে। নীতিমালায় বর্ণিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মঘন্টা হিসেব করে মর্যাদা প্রদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো ও গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ও সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি না করে পদোন্নতির জন্য উচ্চ
ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর সমন্বিত জার্নালে প্রকাশনা চাওয়া অযৌক্তিক, অসম্মানজনক ও হাস্যকর।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জীতেন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন,
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অযৌক্তিক শর্তে বেড়াজালে বহুধা বিভক্তি নীতিমালাকে অভিন্ন নীতিমালা বলে
চালিয়ে দিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়নকে গলা টিপে হত্যা করার পরিকল্পনা বলে আমাদের সমিতি মনে করে।
অভিন্ন নীতিমালার নামে কালো নীতিমালা অবিলম্বে বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ ও সর্বজন গ্রাহ্য
শিক্ষকমন্ডলীর মধ্য থেকে একটি কমিটির মাধ্যমে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও ত্রুটিহীন নীতিমালা তৈরি পূর্বক
বাস্তবায়নের জোর দাবী জানাচ্ছি।’
শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূর হোসেন মিঞা তার বক্তব্যে বলেন, ইউজিসির অভিন্ন
নীতিমালার নামে বিভাজন মূলক নীতিমালা এবং বিশেষ করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে বৈষম্য মূলক
আইন প্রণয়ন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি আরো বলেন ‘প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্ন ভিন্ন
আইন দ্বারা গঠিত বিধায় অভিন্ন নীতিমালা তখনই করা সম্ভব হবে যখন সকল বিশ্ববিদ্যালয় একই আইনের
আওতায় আসবে, যেমন- ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশ’।
উল্লেখ্য, শিক্ষক নেতারা মনে করেন, মূলত শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর দাবিকে ভিন্ন খ্যাতে নিয়ে
যাওয়ার জন্য এমন পায়তারা চলছে। এই নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হলে শিক্ষার মানকে গলাটিপে হত্যা করা
হবে বলেও আখ্যা দেন তাঁরা। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন
অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।