পথের ধারের অযত্ন আর অবহেলায় থানকুনিঃ আছে যার নানা ভেষজ গুন

অবহেলায় থানকুনি
গ্রামাঞ্চলে থানকুনি পাতার ব্যবহার আদি আমল থেকেই চলে আসছে। ছোট্ট প্রায় গোলাকৃতি পাতার মধ্যে রয়েছে ওষুধি সব গুণ। থানকুনি পাতার রস রোগ নিরাময়ে অতুলনীয়।
থানকুনি পাতার গুন
থানকুনি আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এর ল্যাটিন নাম centella aciatica. থানকুনি পাতা দেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। চিকিৎসার অঙ্গনে থানকুনি পাতার অবদান অপরিসীম। প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বহু রোগের উপশম হয় এর ভেষজ গুণ থেকে। খাদ্য উপায়ে এর সরাসরি গ্রহণ রোগ নিরাময়ে থানকুনি যথার্থ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
অঞ্চলভেদে থানকুনি পাতাকে আদামনি, তিতুরা, টেয়া, মানকি, থানকুনি, আদাগুনগুনি, ঢোলামানি, থুলকুড়ি, মানামানি, ধূলাবেগুন, নামে ডাকা হয়। তবে বর্তমানে থানকুনি বললে সবাই চেনে।
ভেষজের দুনিয়াতে থানকুনির স্থান রয়েছে অনেক উপরে। কারণ এর রয়েছে নানান গুণ। থানকুনি বর্ষজীবী উদ্ভিদ। কোনো প্রকার যত্ন ছাড়াই জন্মে। মাটির উপর লতার মতো বেয়ে ওঠে। পাতা গোলাকার ও খাঁজকাটা। সাধারণত স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশেই থানকুনি গাছ বেশি জন্মে। তাই পুকুরপাড় বা জলাশয়ের পাশে থানকুনির দেখা মেলে বেশি।
থানকুনির ভেষজ গুণাবলি ছাড়াও অনেকে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এটি রোপণ করে, তাছাড়া থানকুনি দিয়ে অনেক সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্য সম্মত খাবার তৈরি করা যায়। থানকুনির নানা ভেষজ গুণ রয়েছে। আমাদের দেশের অনেকে থানকুনি পাতার ভর্তা ও খায়।
থানকুনির ভর্তা কিভাবে করা যায়-
উপকরণ
থানকুনি পাতা ৪০-৫০তি, রসুন একটি, কাচা মরিচ একটি, লবণ পরিমাণ মত।
প্রস্তুত প্রণালী
থানকুনি পাতা কুচি কুচি করে কেটে মরিচ, রসুন,লবন মিশিয়ে বাটায় বেটে নিলেই ভর্তা প্রস্তুত হয়। থানকুনি পাতা শাক হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়। ভর্তা করে বা কাঁচা পাতা সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। থানকুনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ।
থানকুনির অন্যান্য উপকার
থানকুনি পাতা সকল ধরনের পেটের রোগের মহৌষধ। পাতা বেটে ভর্তা করে বা ঝোল করে খেলে বদহজম, ডায়রিয়া, আমাশয় ও পেটব্যথা সেরে যায়।
আলসার, এগজিমা, হাঁপানি, চুলকানি ও অন্যান্য চর্মরোগ থেকে মুক্তি লাভে থানকুনি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
নিয়মিত থানকুনির রস খেলে ত্বক ও চুল সুন্দর থাকে। জ্বর, পেটের পিড়া, আমাশয়, আলসার, বাতের ব্যথা বিভিন্ন অসুখের ওষুধ হিসেবে এটির ব্যবহার রয়েছে।
থানকুনি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। সংবহনতন্ত্রের স্থায়ীভাবে স্ফীত ও বর্ধিত শিরা কমাতে সহায়তা করে।থানকুনি পাতা চামড়া মসৃণ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে পুনর্গঠনে সাহায্য করে।

কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *