প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ: আমাদের সকলের দায়িত্ব হলো পরিবেশকে সুন্দর রাখা। কারণ পরিবেশ ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকবো। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো আমরাই আমাদের পরিবেশকে নষ্ট করছি। বিভিন্ন কারণে আমাদের পরিবেশ দূষণ হচ্ছে এবং বর্তমানে যেই দূষণটি সবচেয়ে বেশি পরিবেশের ক্ষতি করছে সেটা হচ্ছে প্লাস্টিক দূষণ । সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই যে এতো পরিমাণে প্লাস্টিক আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করছি তার প্রায় সবগুলা শেষ পর্যন্ত গিয়ে স্থান পায় কোনো না কোনো জলাশয়ে। আমরা কখনোই চিন্তা করি না এই জলাশয়গুলোও জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণির বাসস্থান। আমাদের এই কার্যের ফলে তাদের যে কি পরিমান কষ্ট হয় এবং কি পরিমান মাছ মারা যায় তা আমরা বিবেচনা করি না। তাদের জীবন ও বাসস্থানকে আমরা যে নষ্ট করছি সেই বিষয়ে আমরা কখনোই সচেতন থাকি না। এই প্লাস্টিক দূষণের ফলে মাছ এবং অন্যান্য জলজ প্রাণীর মৃত্যু থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ‘আমাদের পরিবেশ, আমরাই রক্ষা করবো’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড ওশান সায়েন্সেস অনুষদের ছাত্রছাত্রীরা একটি ব্যতিক্রমি আয়োজন করে। তাঁরা নিজ উদ্যোগে ৩ জন শিক্ষক এবং ১৯ জন সহপাঠিকে সাথে নিয়ে বলুহর বাওড়ের প্লাস্টিকের বর্জ্য অপসারণ করা করে। স্থানীয় জনগনও অনেক সহায়তা করে। তাঁরাও প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে তাদের আশংকা প্রকাশ করে। খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের
ওশানোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষক দেবাশীষ পন্ডিত বলেন, “বাওড়ের জলাশয়ের অল্প কিছু অংশ থেকেই সব মিলিয়ে প্রায় ১ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ করেছেন। মাত্র ১০ বর্গমিটার এরিয়া থেকে প্লাস্টিকের প্যাকেট (৪৩ টি), সিগারেটের প্যাকেট (১৪ টি), ওয়ান টাইম প্লাস্টিক (১৩), প্লাস্টিকের বোতল (৫), মেটাল ক্যান (১), শপিং ব্যাগ (১), মিক্স পলিথিন (৫), জুতার সোল (১) এবং অন্যান্য অনেক ধরনের প্লাস্টিকের বর্জ্য পাওয়া যায়। এসবগুলোই পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরুপ।”
খুকৃবির ওশানোগ্রাফি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. জেসমিন আরা বলেন, ” প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে আমরা আজ থেকে কাজ শুরু করলাম। আমাদের সবার সচেতনতা প্রয়োজন।”
খুকৃবির একোয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. আসাদুজ্জামান মানিক বলেন, ” জলজ পরিবেশ সংরক্ষণে সবার এগিয়ে আসা উচিৎ। আমাদের এই প্রচেষ্টা চলমান থাকবে”।
সামনে ছোট ছোট দল নিয়ে স্থানীয় জলাশয়ের বাস্তুতন্ত্রকে ধ্বংসের মুখ থেকে ফিরিয়ে এনে প্রাণ সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখতে চান শিক্ষার্থীরা।