গাং মাগুরের কৃত্রিম প্রজননে সফলতা পেয়েছেন বাকৃবির গবেষকরা

গাং মাগুরের কৃত্রিম প্রজননে

 

গাং মাগুরের গবেষনা

মো. শাহীন সরদার, বাকৃবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক গাং মাগুরের কৃত্রিম প্রজননে সফলতা অর্জন করেছে। ফলে হুমুকির সম্মুৃখীন সুস্বাদু প্রজাতির এই মাছটি প্রান্তিক পর্যায়ে চাষের মাধ্যমে হুমকির অবস্থা হতে ফিরিয়ে আনা, আমিষের চাহিদা পূরণ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন গবেষকরা।

এই প্রজাতির গাং মাগুর মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ঐবসরনধমৎঁং সবহড়ফধ। মাছটি আরো কিছু লোকাল নামে ও পরিচিত যেমন ঘাঘল, ঘাঘলা, গাং টেংরা ইত্যাদি। গাং মাগুরের দুটি প্রজাতি রয়েছে একটি স্বাদু পানির অপরটি সামুদ্রিক। এই প্রজাতিটি বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস নদী ও হাওড় অঞ্চলে পাওয়া যায়। মাছটি ওজনে ১-২কেজি হয়। শান্ত প্রকৃতির মাছের এই প্রজাতিটি সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে ও মূল্য বেশি। প্রতি কেজি প্রায় ৭০০-১০০০ টাকা।

বৈষ্ণিক উষ্ণায়ন, নদী ও জলাশয় দূষণ ও নির্বিচারে মৎস্য সম্পদ আহরণের ফলে এ মাছটি বর্তমানে হুমকির সম্মুখীন। আইইউসিএন রেড লিস্ট বাংলাদেশ ২০১৬ অনুযায়ী মাছটি প্রায় বিপদগ্রস্থ তালিকাভূক্ত।

নাইজেরিয়ার কেব্বি স্টেট ইউনিভারসিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রভাষক ইব্রাহীম শেহু জেগা গাং মাগুরের কৃত্রিম প্রজননে এক বছরের গবেষণায় এই সফলতা অর্জন করেন। তিনি বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইদ্রিস মিয়া ও এ্যাকুয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল হকের তত্ত্বাবধায়নে পিএইচডি গবেষণারত শিক্ষার্থী। গবেষণায় উপদেষ্ঠা হিসেবে পরামর্শ দিচ্ছেন বাকৃবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। গবেষণার কারিগরি সহযোগিতায় যুক্ত আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ ফিল্ড ল্যাবরেটরী কমপ্লেক্সের টেকনিশিয়ান মোঃ আজাদুল ইসলাম।

গত বছর নেত্রকোণা জেলার ঝানঝাইন এলাকা বিধৌত কংশ নদী থেকে ৭০টি গাং মাগুর সংগ্রহ করা হয়। উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে ছয় মাস পর হরমোন প্রয়োগ করে কৃত্রিম প্রজননে সফলতা আসে। একটি স্ত্রী মা মাছ হতে ৪০ হাজার পোনা পাওয়া গেছে। যাদের এক সপ্তাহে বেঁচে থাকার হার ৭০%।

এ বিষয়ে গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. মো. ইদ্রিস মিয়া ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, রেণু পোনার সঠিক পরিচর্যা পদ্ধতি উদ্ভাবনের পাশাপাশি চাষ পদ্ধতি উদ্ধাবনের গবেষণার কাজ চলছে। আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে গাং মাগুর মাছের সম্পূর্ণ পোনা উৎপাদন ও চাষ পদ্ধতি চাষীদের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়া সম্ভব।
এ বিষয়ে গবেষক ইব্রাহীম শেহু জেগা বলেন, নাইজেরিয়াতে আফ্রিকান মাগুরের চাষের প্রচলন অত্যন্ত বেশি। বাংলাদেশি গাং মাগুরের পোনা উৎপাদন ও চাষ পদ্ধতি সফল হলে তা আফ্রিকান মৎস্যচাষীদের নিকট সমাদৃত হবে।

কৃষির আরো খবরাখবর জানতে আমাদের পেইজে লাইকদিনঃ facebook.com/krishisongbad.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *