বাসাইলের মাইজখারা বিলের প্রায় ২শ একর আবাদী জমি বালুর নিচে

basail-pic1

basail-pic1
এ কিউ রাসেল, গোপালপুর (টাঙ্গাইল) :
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাশিল গ্রামের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ঝিনাই নদীর শাখা লাঙ্গুলিয়া নদী দিয়ে প্রবাহিত স্রোতের সাথে ভেসে আসা বালি পড়ে বাসাইল পৌর এলাকার অন্তর্ভুক্ত ফলে এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক কৃষি পরিবারের পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
জানা যায়, গত বর্ষা মৌসুমে ঝিনাই নদী থেকে ভেসে আসা বালি লাঙ্গুলিয়া নদী দিয়ে মাইজখারা উত্তর বিল, দক্ষিণ বিল, পশ্চিম বিল, সেহরাইলের দক্ষিণ বিল ও কলিয়া পশ্চিম বিলে পড়ে। এতে পলল গঠিত বেলে দোআঁশ মাটির তিন ফসল আবাদী জমি প্রায় আড়াই থেকে তিন ফিট বালির নিচে চাপা পড়ে চাষ আবাদের সম্পূর্ণ অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।
বালি চাপা পড়া এলাকার অনেক কৃষক এসব জমি থেকে ফসল উৎপাদন করে নিজেদের জীবন চালাত। খাদ্য শস্য উৎপাদনের শেষ সম্বল একচিলতে জমি বালির নিচে চাপা পড়ায় দিশে হারা হয়ে পড়েছে কৃষক। এই জমি আবাদ না করতে পারলে এলাকার কৃষকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সারা বছর কীভাবে বেঁচে থাকবে এমন দুশ্চিন্তায় দিনাতিপাক করছে তারা।
মাইজখারার কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, আমার ৩ একর জমির উপর বালু পড়েছে। এ জমিতে তিন ফসল আবাদ করা যেতো, কিন্তু এখন সম্পূর্ণ জমি ফসল উৎপাদনের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। একমাত্র কৃষি উৎপাদনের উপর নির্ভর করেই চলে আমার সংসার। আসন্ন বোরো মৌসুমের আগে জমিগুলোর বালি মুক্ত করা না গেলে কোন প্রকার ফসল আবাদ করা যাবে না। এতে না খেয়ে মরণ ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।
কৃষক আতাউর রহমান আতা বলেন, ঝিনাই নদী থেকে ভেসে আসা বালিগুলো লাঙ্গুলিয়া নদী দিয়ে এ বিলে পড়ে প্রায় ২শ একর কৃষি জমি উৎপাদনের সম্পূর্ণ অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এখানে আমারও ২ একর জমিতে বালু পড়েছে।
সরেজমিন এলাকায় গেলে এরকম অনেক কৃষক উক্ত জমি থেকে বালু অপসারণ করার সরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে এলাকার কৃষকের আবাদী জমি যাতে বর্ষায় ভেসে আসা বালিতে গ্রাস করতে না পারে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী করেন।
বাসাইলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার সায়মা আক্তার জানান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পৌর মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাসাইল উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল ফারুক জানান, আমি ইতমধ্যেই বালু চাপা পড়া এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। সেহরাইল হইতে পশ্চিমচক পর্যন্ত লাঙ্গুলিয়া নদীর পূর্ব পাশ মাইজখারা এবং কলিয়ার কিছু অংশসহ প্রায় ২শ একর জমিতে বালি পড়ে আবাদের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। সেহরাইল হইতে পশ্চিমচক পর্যন্ত লাঙ্গুলিয়া নদীর ৪ কিলোমিটার এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে ভবিষ্যতে এ জমিগুলোতে আর বালি পড়বে না। এখন এ সমস্ত জমি বালিমুক্ত করে আবার চাষাবাদ যোগ্য করে তোলা সম্ভব।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *