***এ কিউ রাসেল***
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দুলালিয়া গ্রামের ঘৃতকুমারী চাষি মোহাম্মদ বাদশা মিয়া। অনেকটা শখের বসেই নিজের সামান্য জমিতেই শুরু করেন ঘৃতকুমারীর চাষ। লাভজনক হওয়ায় পরবর্তীতে তিনিই প্রথম বাণিজ্যিক ভাবে ঘাটাইল ও মধুপুর উপজেলায় পাহাড়ি অঞ্চলে ঘৃতকুমারীর চাষ শুরু করেন।তার বাগানে ঘৃতকুমারী ছাড়াও প্রায় একশত প্রজাতির ঔষধি গাছ রয়েছে।
বাদশা মিয়ার বলেন, ২০১২ সালে আমি মধুপুরের জলছত্র অঞ্চলের ভেষজ উদ্ভিদ চাষি রবি খানের পরামর্শে নাটোর ও ঝিনাইগাতি থেকে ২০ হাজার চারা ক্রয় করি। চারা ক্রয়ে খরচ হয় প্রায় ৪০হাজার টাকা। এ চারা বসত ভিটার পাশেই ৩০শতাংশ জমিতে রোপন করি। চারা রোপনের দেড় বছর পর থেকেই চারা থেকে ফলন পেতে থাকি। এতে প্রতি মাসে ২০হাজার চারা থেকে পাতা আসে ৩৫ থেকে ৪৫মণ। এ পাতা ঢাকায় পৌছে দিলে ৮শত টাকা মন হিসাবে দাম পাওয়া যায়। মাসিক খরচ ৫হাজার টাকা বাদ দিয়ে মাসে ১৫ থেকে ২০হাজার টাকা আয় থাকে। বর্তমানে আমার ৬ সদস্যের পরিবার সকল খরচ ঘৃতকুমারী চাষের আয় থেকেই চলে।
তিনি আরো জানান, ঘৃতকুমারী চাষের উপযোগী মাটি বেলে দোঁআশ মাটি । তবে দোঁআশ মাটিতেও এ চাষ করা যায়। মাটি প্রস্তুত করে ২৪ইঞ্চি করে বেড তৈরি করতে হয়। প্রতিটি বেডের দুরত্বও রাখতে হয় ২৪ ইঞ্চি । প্রতি বেডে তিন থেকে চারটি সারি করে ১ফুট দুরে দুরে চারা রোপন করতে হয়। প্রায় সাড়া বছরই এর চারা রোপন করা যায়। তবে বৈশাখ জৈষ্ঠ্য মাসে চারা রোপনের উত্তম সময়। রোপনের দেড় বছর পর ফলন দেয়া শুরু হয়। একটানা ১৪ থেকে ১৫ বছর এ থেকে ফলন পাওয়া যায় । চারা রোপনের বছরই প্রতিটি চারা থেকে রুপান্তরিত কান্ড হিসাবে এক একটি চারা থেকে ৬/৭টি চারা গজায়। পরবর্তীতে এ চারা উঠিয়ে বীজতলা হিসাবে বিক্রির জন্য সংরক্ষণ করা হয়।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাদশা মিয়া তার নতুন ঘৃতকুমারীর বাগানের নিড়ানির কাজ করছেন। টাঙ্গাইলের মধুপুর, ঘাটাইল, নাটোর, শেরপুর, ঝিনাইগাতি অঞ্চলে বানিজ্যিক ভাবে এর চাষ শুরু হয়েছে। তিনি জানান, ঘৃতকুমারীর পাতার সরবতের খ্যাতি জগৎজোড়া। বিভাগীয় শহর ছাড়াও প্রায় প্রতিটি জেলা শহরে সারা বছর জুড়ে চলে এর সরবত। চাষী কম থাকায় বিপননে অসুধিা হয়। চাষীর সংখ্যা বাড়লে বিপণনে সুবিধা হতো। দেশের প্রসাধনী সামগ্রী ও ওষুধ তৈরিতে যে ঘৃতকুমারীর চাহিদা রয়েছে তার অধিকাংশই পুরণ করা হয় ভারত থেকে আমদানী করে। আমাদের দেশে বিচ্ছিন্ন ভাবে এর চাষ হলেও বর্তমানে সরকারি সহযোগিতায় ঘৃতকুমারী চাষে উৎসাহ যোগালে চাষির সংখ্যা বাড়ত উৎপাদন বেশি হতো দেমের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব ।
ঘৃতকুমারীর ঔষধী গুণ সম্পর্কে ঘাটাইল উপজেলার সুনামগঞ্জ দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রসার সহ সুপার মাওলানা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, কোষ্ঠকাঠিন্ন দুর করতে ঘৃতকুমারীরর সরবত তুলনাহীন। স্থানীয় কবিরাজ মোহাম্মাদ লাভলু মিয়া বলেন, শির পীড়া, পেট ব্যথা, চর্ম রোগ, পস্রাবে সমস্যাসহ প্রায় এক ডজন রোগের কাজ করে। বানিজ্যিকভাবে এর চাষকে উৎসাহিত করার জোর দাবী জানান সরকারের কাছে।
কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম
####
আপনার লিখাটি পরে উপকৃতি হলাম।