রাস্তার পাশে সবজি চাষে ভাগ্য বদল হয়েছে শেরপুরের অনেক চাষীর

রাস্তার পাশে সবজি চাষে ভাগ্য বদল

 

মোঃ মোশারফ হোসেন, নকলা (শেরপুর) ঃ

রাস্তার পাশে সবজি চাষে ভাগ্য বদল

শেরপুরের নকলা উপজেলার আবহাওয়া ও দোআঁশ মাটি শাক সবজি চাষের উপযোগী। সবজি ভান্ডার খ্যাত নকলা উপজেলার রাস্তার পাশের পতিত জায়গায় শাক সবজি চাষ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অর্থ ও মৌসুমি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। উপজেলার প্রায় সব রাস্তার পাশের পতিত জমিতে বিভিন্ন শাক সবজি চাষ করে এমনটাই প্রমান করছেন শত শত কৃষক।

কয়েক বছর আগেও রাস্তার পাশের পতিত জমিকে কাজে লাগাতে শাক সবজি চাষ করার কথা কেউ চিন্তাও করেনি। গত দুই বছর ধরে উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের ভূরদী ছাল্লাতুলা এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে বাংলায় অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী তমিজ উদ্দিন ও এইচএসসিতে পড়ুয়া ফয়সল তার বাড়ির পাশের গনপদ্দী হতে ছাল্লাতুলা চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তার পাশে বিভিন্ন শাক সবজি লাগিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তার দেখাদেখি রাস্তার পাশে জমি আছে এমন সবাই চাষ করা শুরু করেছেন। নিজস্ব জমি ছাড়া, নামে মাত্র শ্রমে অল্প ব্যয়ে চাষ করে পারিবারের চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট শাক সবজি বিক্রি করে প্রচুর টাকাও আয় করছেন তারা।

তমিজ উদ্দিন ও ফয়সল জানায়, গত দুই বছর ধরে রাস্তার ধারে বছরে দুইবার মৌসুমি শাক সবজি চাষ করে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট গুলো বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পায় তা দিয়েই তাদের দুই ভাইয়ের পড়া লেখার খরচ চলে। বর্তমানে শীত কালীন বিভিন্ন শাক সবজিতে রাস্তার পাশ যেন পূর্ণাঙ্গ একটি বাগানে পরিণত হয়েছে। তাদের দেখাদেখি এলাকার সবাই রাস্তার পাশে শাক সবজি রোপন করে অতিরিক্ত পুৃষ্টি ও টাকা পাচ্ছেন। বানেশ্বরদী, পাঠাকাটা, চরঅষ্টধর, চন্দ্রকোণা, গৌড়দ্বার, উরফা, গনপদ্দী, নকলা, টালকী ইউনিয়ন সহ পৌর এলাকার প্রায় সব রাস্তার পাশেই নিয়মিত শাক সবজি চাষ হচ্ছে।

বানেশ্বরদীর মোকলেছুর রহমান, মনির, হেলাল, ঈসমাইল, কামাল, কমল, বেলাল, রকিব, দেলোয়ার, এএসএমবি করিম, লিটন; পাঠাকাটার মিলন, চরঅষ্টধরের সামছুল, চন্দ্রকোণার আজিম ও মুক্তার; গৌড়দ্বারের সুমন, উরফার রেজাউল করিম হীরা ও মোশাররফ; গনপদ্দীর ছাইদুল ইসলাম, নকলার মোশারফ, লিটন, মোর্শেদ আলম; টালকী ইউনিয়নের বেলায়েত হোসেন ও আক্তার; পৌরসভার হাফিজুর রহমান, লাভার শহিদুল ইসলাম ও জালালপুর এলাকার কামাল; কৃষ্ণপুরের ফোরকান, জগলু, মজনু, মোতালেব ও হাবিবুরের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা কয়েক বছর ধরে রাস্তার পাশে শাক সবজি চাষ করে পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকাও আয় করছেন। এতে করে বছরে প্রতি পরিবারে শাক সবজি ক্রয় বাবদ অন্তত ১৫ থেকে ২০ হাজার করে টাকা বেচে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, উপজেলায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার রাস্তার পাশে বছরে দুইবার শাক সবজি চাষ করা হয়। তাছাড়া বিভিন্ন জাতের কালাই চাষ করেও সুফল পাচ্ছেন কৃষক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ূন কবীর বলেন, নকলার মতো সারাদেশের রাস্তার পাশে র পতিত জমিকে এভাবে কাজে লাগাতে পারলে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আসতে পারে পবিপুল পরিমাণ টাকা। তাছাড়া রাস্তার ভাঙ্গন রোধ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাতো আছেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *