প্রিয় পাঠক,
গাছ ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বারান্দা আর ছাদের পাশাপাশি ঘরের কোণেও যদি গোটা কয়েক ছোট্ট সুন্দর গাছ রাখা যায়, তবে আপনার ঘরের সৌন্দর্য অনেকখানিই বেড়ে যাবে। আর আপনি পাবেন ঘরের মাঝে একটি সতেজ পরিবেশ।
যেসব গাছ ঘরে রাখলে তাদের বৃদ্ধি বাঁধা প্রাপ্ত হয়না, মূলত তাদেরকেই ইনডোর প্লান্ট হিসাবে বিবেচনা করে হয়ে থাকে। ইনডোর প্লান্ট সম্পর্কে সঠিক ধারনা আমাদের ঘর সাজাতে আর একটু বেশি সাহায্য করবে। যেসব গাছ আমরা ঘরে রাখতে পারি তার মধ্যে- কয়েক রকমের পাতা বাহার, ক্যাকটাস,ডেসার্ট রোজ,বট বনসাই,ডেসিরা ,পাথর কুচি, কেবি রোজ উল্লেখ যোগ্য। এছাড়া বারান্দার গ্রিলে আর হুকে ঝোলানোর জন্য পাতা বাহার, মানি প্লান্ট ও অর্কিড উপযোগী। কিন্তু একটি কথা মনে রাখবেন,সাময়িক ভাবে সুন্দর দেখতে লাগাটাই সব নয়, ঘর সাজানো গাছপালা রাখলে নিতে হবে এর বিশেষ কিছু যত্ন,না হলে আপনার ঘর অপরিষ্কার দেখাবে আর গাছ গুলোও বাঁচবে না।
আসুন জেনে নেয়া যাক কি করে যত্ন নেবেন আপনার ঘর সাজানো গাছপালার।
- ঘর সাজানো গাছপালা এসি বা কুলারের খুব কাছে রাখবেন না,এতে প্লান্ট খুব জলদি শুকিয়ে যায়। এছাড়াও মাঝে মাঝে প্লান্ট এর জায়গা বদল করুন।
- গাছ লাগানোর সময় বেলে মাটি ব্যবহার করুন। কেননা এই মাটিতে পানি বেশী সময় স্থায়ী হয় না। ইনডোর প্লান্টের গোড়ায় পানি জমে গেলে গাছ বাঁচবে না। বাসায় যদি টবে গাছ লাগাতে সমস্যা হয় তবে নার্সারি থেকেই লোক দিয়ে টবে গাছটি লাগিয়ে নিন।
- ঘর সাজানো গাছপালা বেশি বড় করবেন না,ঘর অন্ধকার দেখাবে। এই কারনে বাড়তি পাতা ছেঁটে রাখুন। এ ছাড়া শুকনো ফুল ও পাতাও ছেঁটে দিন ।
- সপ্তাহে ১ থেকে ২ বার গাছ রোদে দিতে হবে। সকালের হালকা রোদই উপকারি। নিয়ম মেনে গাছে পানি দিন। দিনে ২ বার সাধারণত মোটামুটি সব গাছের ক্ষেত্রেই খাটে,সকালে একবার আর বিকালে রোদ কমে গেলে আরেকবার। তবে পরিমাণ বুঝে দিন পানি। আর কতটা দিতে হবে তা কেনার সময়েই ভালো করে জেনে নিন।
- ৭ থেকে ১০ দিন পর পর টবের মাটি উলট পালট করে দিন, এতে গাছের মাটির নিচের ক্ষতিকর গ্যাস বের হয়ে যাবে। তবে খুবই সাবধানে কাজটি করতে হবে। যাতে গাছের শিকড়ের কোন ক্ষতি না হয়।
- পচা পাতা গাছের কাছে জমিয়ে না রেখে দ্রুত ফেলে দিন ।
- গাছের পাতা ও ফুলের রঙ হালকা হতে শুরু করলে গাছটিকে ঠাণ্ডা ও তাপ কম পৌছায় এমন স্থানে রাখুন । কারন অতিরিক্ত তাপ লাগলে পাতা ও ফুলের রঙ হালকা হতে শুরু করে।
- রাতে গাছ কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়ে ,তাই সম্ভব হলে রাতে শোবার ঘর থেকে সরিয়ে বারান্দায় রাখুন। আর যদি সরানো সম্ভব না হয় তবে শোবার ঘরের জানালা খুলে রাখুন।
- সপ্তাহে একবার প্লান্টে উপযোগী মেডিসিন দিন, তা হলে পোকা মাকড় কম হবে।
ইনডোর প্লান্ট রাখার জন্য আমরা অনেকেই ডেকরেটিভ পট ব্যবহার করি। কিন্তু যখনই দেখবেন শিকড় ড্রেনেজ হোলের কাছে পৌঁছে গেছে তখনই নতুন পটে প্লান্ট সরিয়ে ফেলুন। পানি দেয়ার পর লক্ষ্য রাখুন যেন বাড়তি পানি ড্রেন হয়ে বেরিয়ে যায়। তবের নিচে মাটির থালা ব্যবহার করুন, তাতে পানিতে ঘর ময়লা হবে না।
গাছের পাতায় একটা সাদা ছোপ ছোপ দেখা যায়, এটা এক ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন। সাবান পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থানটি মুছে ফেলুন ,দেখবেন পাতা পরিষ্কার হয়ে গেছে।
প্লান্ট এর ধুলো পরিষ্কার করতে পালকের ডাস্টার ব্যবহার করবেন না। কারন এই ধরনের ডাস্টার থেকে ছোট ছোট পোকা গাছের পাতায় গিয়ে গাছের ক্ষতি করতে পারে। পানি দিয়ে গাছকে পরিষ্কার করা সব থেকে ভাল উপায়।
টিপস-
১) যারা ঘরে রাবার প্লান্ট রাখেন তারা প্লান্টের পাতা চকচকে দেখাতে পাতা গুলি দুধে ভেজানো তুলো দিয়ে মুছে ফেলুন।
২)সপ্তাহে অন্তত একবার ইনডোর প্লান্টকে কয়েক ঘণ্টা বাইরে রেখে দিন ,প্লান্ট ভাল থাকবে।
৩)প্লান্টে ইনফেকশন কম করতে মাসে একবার নিম পাতা গরম পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন,সেই পানি ছেঁকে নিয়ে প্ল্যান্টে ঢেলে দিন । প্রিয়ডটকম
কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম
ঘর সাজানো গাছপালার যত্ন-আত্তি
অনেক সুন্দর আইডিয়া