জেনে নিন অ্যাকুরিয়ামে বাহারি মাছের পরিচর্যা ও রোগ ব্যধিতে করনীয় নানা বিষয়

অ্যাকুরিয়ামে বাহারি মাছের রোগব্যধিতে

অ্যাকুরিয়ামে বাহারি মাছের পরিচর্যা
নাহিদ বিন রফিক

১ম পর্ব

অ্যাকুরিয়ামে বাহারি মাছের পরিচর্যা

মানুষ সৌন্দর্যের পুজারি। প্রকৃতির বিচিত্র বাহারি মাছ যখন স্বচ্ছ কাচের জলজবাগানে ঘুরে বেড়ায় তা দেখতে কার না ভালো লাগে! অ্যাকুরিয়াম হচ্ছে এমনি ধরনের চারদিকে কাচ দিয়ে ঘেরা জলধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি পাত্র, যেখানে মাছ ও উদ্ভিদ রাখা সম্ভব। অ্যাকুরিয়াম কেবল শখ কিংবা শোভাবর্ধনকারী নয়, এর বাণিজ্যিক গুরুত্বও রয়েছে বেশ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষকরে রাজধানীর কাঁটাবনে গড়ে উঠেছে অ্যাকুরিয়ামের জমজমাট ব্যবসা। পাশাপাশি নিউমার্কেট, গুলশান এবং বনানীতে বেশ ক’টি দোকান রয়েছে। এছাড়া দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতেও এর যাবতীয় উপকরণ পাওয়া যায়। যদিও কোনো এক সময় অ্যাকুরিয়ামে মাছ পালন ছিল ব্যয় সাধ্য। এখন তা কিন্তু নয়। শৌখিনতা ও ক্রয়ক্ষমতার কারণে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ইচ্ছে করলে আপনিও এর অংশীদার হতে পারেন।

অ্যাকুরিয়াম তৈরি
অ্যাকুরিয়াম তৈরির জন্য প্রথমেই আকৃতি নির্বাচন করতে হয়। আয়তাকার, ত্রিকোণাকার, বোতলাকৃতি, ছয়কোণা যে কোনো ফ্রেমেই হোক; তাতে পানির চাপ সহ্য করতে পারবে এমন শক্ত ও স্বচ্ছ কাচ ব্যবহার করা উচিত। এজন্য কাচের পুরু হবে কমপক্ষে ৬০ মিলিমিটার এবং এর সংযোগ স্থলে বিশেষ ধরনের আঠা লাগাতে হবে। তলার কাচটি (ধারক) অবশ্যই ভারি হওয়া দরকার, যাতে অ্যাকুরিয়ামের পুরো ওজন বহন করতে পারে। তবে আকার বড় হলে লোহার ধারক ব্যবহার সবচে’ নিরাপদ। উপরের ঢাকনা হিসেবে কাঠ, প্লাস্টিক কিংবা অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করা যায়। এছাড়া ঢাকনা খোলা এবং বন্ধ করার ব্যবস্থা রাখা দরকার। আরেকটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে, অ্যাকুরিয়ামের প্রস্থ এবং উচ্চতা উভয়ই যেন দৈর্ঘ্যরে অর্ধেক হয়।

উপকরণ
অ্যাকুরিয়ামে মাছ পালনের জন্য যেসব উপকরণ দরকার; তা হলো- মোটা বালি, পাথর কুঁচি, জলজ উদ্ভিদ, ফিল্টার, এয়ার মটর, এয়ার এক্সিকিউটর, এনার্জি বাল্ব, ওয়াটার হিটার এবং রাবারের পাইপ।

পরিবেশ সৃষ্টি
মাছ পালন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো অ্যাকুরিয়ামে পরিবেশ সৃষ্টি করা। আর এজন্য উপকরণগুলো একেক করে সাজাতে হবে। অ্যাকুরিয়ামে পানি দেয়ার আগে উদ্ভিদ লাগানোর জন্য তলা প্রস্তুত করতে হয়। এক্ষেত্রে মোটা বালি, পাথরের কুঁচি এবং রঙিন দ্রব্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। তলা প্রস্তুত হলে ভেলিসনেনিয়া, সেরাটোফাইলাম, ওয়াটার স্পাইট, অ্যানাক্যারিশ, ঝাঁঝি, জলজ পদ্ম, শাপলা এসবের যে কোনো উদ্ভিদ রোপণ করতে পারেন। এগুলো শুধু শোভাবর্ধণই নয়, এর উপকারিতাও আছে। মাছের বর্জ্য থেকে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাস শোষণ করে পরিবেশ অনুকূলে রাখে। সব কাজ শেষে পরিষ্কার পানি দিয়ে অ্যাকুরিয়াম ভর্তি করতে হবে। সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণের জন্য অ্যাকুরিয়ামে কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা থাকা দরকার। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা করে বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে রাখতে হবে।

 

আগামী পর্বের দিকে চোখ রাখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *