গমের ব্লাস্ট রোগের পরিচিতি, বছর ব্যাপি কার্যকারীতা ও দমন ব্যবস্থাপনা

গমের ব্লাস্ট রোগের পরিচিতি

গমের ব্লাস্ট রোগের পরিচিতি

ড. মোঃ আবুল কাসেম

গমের ব্লাস্ট রোগের পরিচিতি :গমের ব্লাস্ট একটি প্রধান ক্ষতিকর ছত্রাকজনিত রোগ। ছত্রাকটির বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাগনাপরথি অরাইজি  ট্রিটিকাম। গমের শীষ বের হওয়া থেকে ফুল হওয়া পর্যন্ত সময়ে আবহাওয়া উষ্ণ ও আর্দ্র  থাকলে এ রোগের সংক্রমণ বেশি হয়। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০১৬ সালে যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও ভোলা জেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব  দেখা যায়। এ রোগের কারণে আক্রান্ত  গমের ফলন শতকরা ২৫ থেকে ৩০ ভাগ কমে যায় এবং ক্ষেত্র বিশেষে  প্রায় সম্পূর্ণ ফসল বিনষ্ট হতে পারে।

রোগের লক্ষণ

  • প্রাথমিক পর্যায়ে পাতায় ক্ষুদ্রাকার চোখাকৃতির দুই একটি দাগ দেখা যায়।
  • প্রধানত গমের শীষে এ ছত্রাকের আক্রমণ হয়
  • শীষ হওয়ার পর্যায়ে শীষের উপরিভাগ শুকিয়ে সাদাটে বর্ণ ধারণ করে যা সহজেই নিম্নভাগের সবুজ ও সুস্থ অংশ থেকে আলাদা করা যায়।

ব্লাস্ট রোগের আদর্শ (Typical) লক্ষণ হলো অনুকূল পরিবেশে শীষের প্রায় সম্পূর্ণ অংশই শুকিয়ে সাদাটে হয়ে যায়। আক্রান্ত শীষের দানা অপুষ্ট হয় ও কুঁচকে যায় এবং ধূসর বর্ণ ধারণ করে।

রোগ দমন ব্যবস্থাপনা

  • ব্লাস্টমুক্ত গমের ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
  • অপেক্ষাকৃত কম সংবেদনশীল জাত যেমন-বারি গম ৩৩ এর  চাষ করা যেতে পারে।
  • উপযুক্ত সময়ে (কার্তিকের শেষ সপ্তাহে অর্থাৎ নভেম্বরের ২য় সপ্তাহে) বীজ বপন করা।
  • বপনের আগে প্রতি কেজি বীজের সাথে ৩ গ্রাম হারে প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।

প্রতিষেধক ব্যবস্থা হিসেবে শীষ বের হওয়ার সময় একবার এবং এর ৭ থেকে ১০ দিন পর আরেকবার ৫ শতাংশ জমিতে ৬ গ্রাম নাটিভো ৭৫ ডব্লিউ জি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।

লেখকঃ প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় প্রধান,উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ময়মনসিংহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *