যেভাবে শুরুঃ
মধু রপ্তানি করে দেখিয়ে দিয়েছেন নকলার ফয়জুর রহমান।উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, দৃঢ় সংকল্প এবং প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে মৌমাছি পালন করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। মধু রপ্তানি করে এমনটাই প্রমান দেখিয়ে দিয়েছেন নকলার ফয়জুর রহমান মাষ্টার।। তার সংগৃহীত মধু নিজে না পারলেও অন্যের মাধ্যমে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। সে হয়েছে আতœনির্ভরশীল, পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা। তার দেখা দেখি মনির, রাজবাহার ও নজরুলসহ অনেকেই মৌমাছি পালনে আগ্রহী হয়েছেন, তারাও স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খোঁজে পেয়েছেন।
যেভাবে মধু রপ্তানি শুরুঃ
ফয়েজুর জানান, দরিদ্র ঘরে জন্ম নেওয়ায় এইচএসসি পাশের পর থেকেই চাকরি খোঁজা শুরু করেন। কিন্তু চাকরি না পেয়ে ডিগ্রীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় শেরপুরের বিসিক থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে দেশীয় সিরেনা মৌমাছি পালন শুরু করেন। তবে ৩০ জন প্রশিক্ষনার্থীদের মধ্যে সে একাই এখন বিদেশী মেলিফেরা মৌমাছি চাষ প্রকল্পের গর্বিত মালিক। মধু রপ্তানি শুরু করেছেন তিনি।
পরিচর্যারত অবস্থায় তার কাছে জানা যায়, ২০০০ সালে তারা প্রশিক্ষন নেন। বিসিক থেকে প্রাপ্ত ২টি মৌ বক্স ও প্রশিক্ষন লব্ধ জ্ঞানকে পুঁজি করে তার মৌমাছি পালনের যাত্রা শুরু। তার পর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে ফয়েজুরের ১২০টি মৌবক্স রয়েছে। তাছাড়া নজরুলের ৫২টি, মনিরের ৬০টি, রাজবাহারের ১৭টি, মাহমুদের ২০টি, হালিমের ৭৫টি, জহুরুলের ১১৪টি বক্স আছে। মধু উৎপাদন করা পর্যন্ত প্রতি বক্সে ১ থেকে দেড় হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে তাদের।
ফয়েজুরের ১২০টি বাক্স তৈরি সহ মধু উৎপাদন পর্যন্ত লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হলেও বছরে দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকা আয় হয় তার। নকলায় যথেষ্ট বনায়ন না থাকায় বছরের কয়েক মাস মৌ বক্স গুলো মধুপুর গড়ের নিকটে রাখা হয়। শুধুু মাত্র সরিষা ও মৌসুমি ফলের মৌসুমে এলাকাতে আনেন। প্রতি বক্সহতে বছরে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ কেজি মধু পাওয়া যায়। মৌসুম ভিত্তিক পাইকারি প্রতি মণ সরিষার মধু ১২হাজার টাকা, লিচুর, আম ও কুলের মধু ১৪হাজার টাকা, কালোজিরার মধুু ১৭হাজার টাকা হিসাবে বিক্রি করেন। চলতি সরিষার মৌসুমে ফয়েজুরের ৭৫টি বাক্স হতে প্রায় ২২ মণ মধু সংগ্রহ করা হয়। যার পাইকারি বাজার মূল্য আড়াই লক্ষ টাকা। আর খুচরা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা করে বিক্রয় করলে ৩ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু স্থানীয় ভাবে এত মধু বিক্রি করা সম্ভব হয়না। তাই বাংলাদেশ মৌ চাষী সমিতির মহাসচিব সাতক্ষীরার আফজাল হোসেনের মাধ্যমে কম মূল্যে ভারত সহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে বলে তারা জানান। তারা বলেন, বন্ধুদেশ গুলোতে মধু রপ্তানির ব্যবস্থা করা সহ সহজ ব্যাংক ঋণ দিলে তারা মৌমাছি পালন করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে নজির ঘটাতে সক্ষম।
উপসংহারঃ
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, মৌ চাষিদের প্রশিক্ষণ এবং মধু উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষন সহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান যে এলাকায় মৌমাছি পালন করা হয় সে এলাকায় সরিষাসহ যেকোন শস্যের ফলন ১৫ থেকে ২০ ভাগ বাড়ে। এতে শুধু মৌচাষীরাই লাভবান হচ্ছেন না, কৃষকরাও বিনাশ্রমে বাড়তি লাভ পাচ্ছেন।
মোঃ মোশারফ হোসেন, নকলা (শেরপুর) থেকেঃ
nice article
চমৎকার আর্টিকেল পড়লাম