জান্নাত ঝুমাঃ
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) কর্তৃক পরিচালিত গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে বরিশালের সদর, হিজলা ও মেহেদিগঞ্জ উপজেলায় ইলিশের ৬ষ্ঠ অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
গত ০৮ নভেম্বব ২০১৭ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার বিষয়টি চুড়ান্ত করা হয়। প্রস্তাবিত ৬ষ্ঠ অভয়াশ্রমের জন্য চিহ্নিত এলাকাসমুহ হচ্ছে- বরিশাল জেলার সদর ও মেহেদিগঞ্জ উপজেলার কালাবদর নদীর ১৩.১৪ বর্গ কিলোমিটার, মেহেদিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলার গজারিয়া ও মেঘনা নদীর যথাক্রমে ৩০ বর্গ কিলোমিটার এবং ২৭৪.৮৬ বর্গ কিলোমিটার। প্রস্তাবিত ৬ষ্ঠ অভয়াশ্রম এলাকার নদীসমূহের মোট দৈর্র্র্ঘ্য হচ্ছে ৮২ কি.মি. এবং আয়তন হচ্ছে ৩১৮ বর্গ কিলোমিটার।
মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে যে, দীর্ঘ ৫ বছরে ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত গবেষণায় উল্লিখিত ৩টি নদীতে জাটকার প্রাচুর্যতা, পানির গুণাগুন এবং জাটকার খাদ্য প্লাংকটনের আধিক্যতার ভিত্তিতে অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। পরবর্তীতে অভয়াশ্রম ঘোষণার জন্য মৎস্য অধিদপ্তর প্রস্তাব প্রেরণ করা হলে মৎস্য অধিদপ্তর সরেজমিনে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৩টি নদীর মোট ৮২ কি.মি. এলাকাকে অভয়াশ্রমের জন্য চিহ্নিত করে। উক্ত অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা হলে প্রতি বছর আরো সাড়ে ৪ হাজার কোটি জাটকা নতুনভাবে সংযোজিত হবে এবং ইলিশের উৎপাদন আরো বাড়বে বলে বিএফআরআই এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে যে, ৬ষ্ঠ অভয়াশ্রম ঘোষণার জন্য সরকার শীঘ্রই গেজেট প্রকাশ করবে এবং উক্ত এলাকায় মার্চ-এপ্রিল মাসে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে চাঁদপুর জেলার ষাটনল হতে লক্ষীপুর জেলার চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনা নদীর নিম্ম অববাহিকার ১০০ কি.মি. এলাকা, ভোলা জেলার মদনপুর/চর ইলিশা হতে চর পিয়াল পর্যন্ত মেঘনা নদীর শাহ্বাজপুর শাখার ৯০ কি.মি. এলাকা, ভোলা জেলার ভেদুরিয়া হতে পটুয়াখালীর চর রুস্তম পর্যন্ত তেতুলিয়া নদীর প্রায় ১০০ কি.মি. এলাকা পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার আন্ধারমানিক নদীর ৪০ কি.মি. এলাকা, এবং শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার নি¤œ পদ্মার ২০ কি.মি. এলাকায় ইলিশের ৫টি অভয়াশ্রম রয়েছে। অভয়শ্রম প্রতিষ্ঠা ও মা ইলিশ সংরক্ষণের কারণে সাম্প্রতিককালে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ৫.০ লক্ষ মে. টন ছাড়িয়ে গেছে।