জেনে নিন কম খরচে গরুকে সাইলেজ করে খাওয়ানোর উপায়

সাইলেজ করণ

সাইলেজ করণ

শাহ এমরান,স্বপ্ন ডেইরী এন্ড ফিসারিজঃ

একটা ফার্মকে লাভবান করার জন্য অনেকগুলো বিষয়ের মধ্যে যে দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ তা হল:

১. # খাবার খরচ কমিয়ে আনা
২. # ব্যবস্থাপনা খরচ কমিয়ে আনা

খাবার খরচ কতটা কমিয়ে এই ব্যবসাকে লাভবান করা যায় এর কিছু বাস্তব চিত্রে দেখার জন্য গিয়েছিলাম Kashful Agro।। একটা ৩০০-৩৫০ কেজি ওজনের গরুর পিছনে এই ফার্মে প্রতিদিন কত টাকা খরচ আছে আন্দাজ করে বলতে পারবেন? আমি জানি আপনারা যে হিসাবটা দেবেন তার সাথে অনেকের হিসাবই মিলবেনা। উত্তর হচ্ছে মাত্র ৮০ টাকা। এখন স্বভাবতই আপনারা হিসাব চাইবেন। আমি চাই হিসাবটা আপনারা করেন, আর আমি শুধু সাইলেজ করার প্রক্রিয়া, খাওয়ানোর নিয়মগুলো আপনাদের জানাই।

সাইলেজ কেন করতে হয়, কাদের জন্য সাইলেজ করা খুব জরুরী দরকার। উত্তর:::: শুধু দানাদার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করে লাভ করা সম্ভব নয়। কম খরচে গরুর ভালো সাস্থ্য পেতে হলে ঘাস করা খুব দরকারী। তো দেখা যায় ১২ মাস ঘাসের সরবারহ বা অনেকেই চাষ করতে পারেনা বন্যা বা আশে পাশে উচু জায়গা বা জমির অভাবে। দেখা যায় ৬ মাস ঘাস খাওয়াতে পারে, ৬ মাস পারেনা। যখন পারেনা তখন দানাদার খাবার আর খড় খাওয়াতে গেলে খরচের পরিমান অনেক বেড়ে যায়। হা, তাদেরই সাইলেজ করতে হবে। ঘাস, ভুট্টা গাছকে সাইলেজ করে ৬ মাস চোখ বন্ধ করে খুব সহজেই খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করা যায়। বিদেশে যেখানে আবহাওয়ার বৈরিতা আছে সব খানে গরুর ফার্মগুলোতে এভাবে সাইলেজ করা হয়।

সাইলেজ করার নিয়ম::

টনকে টন ঘাস, খড়, ভুট্টার গাছকে ক্ষেত থেকে কেটে এনে ছবির মত ছোট ছোট পিছ করে একটা নির্দিস্ট স্থানে যেখানে জমিয়ে রেখে কয়েক মাস ধরে খাওয়ানোর পদ্ধতির নামই সাইলেজ প্রক্রিয়া।

প্রথমে ক্ষেত থেকে কেটে আনুন ঘাস, খড় ও ৬৫-৭০ দিনের আস্ত ভুট্টা গাছ। ভুট্টাটা এমন হতে হবে যেন দানাগুলো নরম থাকে। এরপর মেশিনের সাহায্যে ঘাস, খড়, ভুট্টা গাছকে ছোট ছোট পিস পিস করে একত্রে মিশিয়ে নিম্নোক্ত কয়েকভাবে স্টোর করে রাখা যাবে।

১) ড্রামের ভিতর ভালভাবে চেপে ঢুকিয়ে মুখ বন্ধ করে এয়ার টাইট করে রাখা।যেন বাতাস না ঢোকে।
২) মাটির নিচে গর্ত করে মোটা পলিথিন বিছিয়ে ভালভাবে চেপে এয়ার টাইট করে মুখ বন্ধ করে রাখা।
৩) কোন এয়ার টাইট রুমের ভেতরে ভালভাবে চেপে চেপে রেখে পলিথিন দিয়ে ঢেকে এয়ার টাইট করে বেধে রাখা।

যখন খাওয়ানোর দরকার হবে এখান থেকে বের করে খাওয়াতে হবে। তবে আমাদের দেশে আবহাওয়ার বেশী আদ্রতার কারনে দেখা যায় খোলা জায়গায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে যদি সাইলেজ করে রাখা হয় বাতাস ঢুকে যাবার কারনে ১০%-১৫% এর মত খাবার অনুপযোগী হয়।

এই সাইলেজে খুব সুন্দর একটা ঘ্রান আসবে এবং খেতে দেবার আগে তা বের করে খোলা জায়গাতে মেঝেতে বিছাতে হবে। এরপর পরিমানমত চিটাগুড় এবং খুব সামান্য ভুষি, কুড়া মিশিয়ে সবগুলো মিশ্রন করে শুকনো অবস্থায়ই গরুকে খেতে দেয়া হয় দিনে ৩ বার। এতে পানি মিশাবেন না। খাবার পর পাত্রে ফ্রেস পানি দিয়ে দিতে হবে। আমাদের অনেক গরু আছে ফ্রেস পানি খেতে চায়না, কিন্তু এটা অভ্যাসের ব্যাপার। যা অভ্যাস করাবেন তাই হবে।

এই # সাইলেজ ব্যবস্থাপনায় যেভাবে খাবার দিতে দেখলাম আজ তাতে খাবার খরচ ৩৫০ কেজি ওজনের # গরু প্রতি ৮০ টাকা গড়ে প্রতিদিন পড়বে। অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্যি।গ্রোথ ও খুব ভালো হয়েছে। আর এর থেকে কম ওজনের পড়বে আরো অনেক কম। অসাধরন এক পদ্ধতি দেখলাম, ভালো লাগলো তাই আপনাদের জানালাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *