রাফি আব্দুর রহমান, শেকৃবি থেকেঃ
জলাতঙ্ক : জিরো বাই ৩০” অর্থআৎ “জলাতঙ্ক সম্পর্কে জানুন, ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মূল করুন”- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হলো ‘বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০১৭’।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এবার বাংলাদেশে পালিত হয়েছে এ দিবসটি। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রাজধানীর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রাঙ্গন থেকে একটি বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে খামারবাড়ি সড়ক প্রদক্ষিন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে এসে শেষ হয়। পরববর্তীতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন-সচিব জনাব মোঃ কামরুজ্জামান। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ডাঃ মোঃ মেহেদী হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের গবেষণা বিভাগের পরিচালক ডাঃ এ কে এম নজরুল ইসলাম এবং সিডিসি এর রোগ নিয়ন্ত্রন ও লাইন ডিরেক্টর বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ সানিয়া তাহমিনা ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) ডাঃ হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক। জলাতঙ্ক নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিভিএইচ এর ভেটেরিনারি অফিসার ডাঃ মাকসুদুল হাসান হাওলাদার ও সিডিসি এর রোগ নিয়ন্ত্রন ও লাইন ডিরেক্টর বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ সানিয়া তাহমিনা। অনুষ্ঠানে জলাতঙ্ক নিয়ে আলোচনা করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কে. বি. এম. সাইফুল ইসলাম, ওয়ান হেলথ টেকনিক্যাল এডভাইজার ডাঃ মোঃ আবুল কালাম ও সিডিসির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ শ.ম. গোলাম কায়সার। মুখ্য আলোচনায় ড. কে বি এম সাইফুল ইসলাম বলেন, “শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, জলাতঙ্ক নির্মূল করতে হলে সকলকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন, শুধু কুকুর বা বিড়ালকেই নয়, জলাতঙ্ক প্রতিরোধে গরু, ছাগলসসহ অন্যান্য গবাদি পশুকে প্রি-এক্সপোজার ভেকসিন দিতে হবে”। আলোচনায় বক্তারা বলেন, কুকুর কামড়ালে সাথে সাথেই কামড়ানোর স্থানে সাবান পানি দিয়ে ধৌত করলে জলাতঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশে প্রায় বারো লক্ষ কুকুর রয়েছে যার মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কুকুরকে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে সারাদেশে ৬৭ টি সেন্টারের মাধ্যমে জলাতঙ্কের ফ্রি টিকাদান কর্মসূচি চালু রয়েছে। বক্তারা ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে জলাতঙ্ক মুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর সর্বপ্রথম জলাতঙ্ক রোগের টিকা আবিষ্কার করেন, তাঁরই স্মরণে লুই পাস্তুরের মৃত্যু দিনে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে থাকে জলাতঙ্ক দিবস। জলাতঙ্ক রোগ সাধারণত কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বেজী, বানর ইত্যাদি প্রাণীর মাধ্যমে ছড়ায়। টিকা প্রয়োগের মাধ্যেমে জলাতঙ্ককে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব।