জৈব নিরাপত্তা (Bio Safety): আদর্শ খামার ব্যবস্থার জন্যই প্রয়োজন

জৈব নিরাপত্তা

জৈব নিরাপত্তাপ্রোটিন হাউজ ঃ

জৈব নিরাপত্তা খামারের একটি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি যার মাধ্যমে মুরগীকে রোগ-বালাইসহ বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্ত রাখা যায় ৷ সঠিকভাবে জৈব নিরাপত্তা অনুসরনের মাধ্যমে খামারের অনেক ধরনের সমস্যা দূর করে অধিক উত্পাদন, খামারের ব্যয় হ্রাস এবং খামারকে লাভজনক করা সম্ভব ৷ তাই জৈব নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷

জৈব নিরাপত্তা পালনের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে:
• ফার্মের স্থান র্নিবাচন
• শেড নির্মান
• ধকল প্রতিরোধ
• খাদ্য ব্যবস্হা
• বাতাস
• মানুষসৃষ্ট রোগ বা ধকল নিয়ন্ত্রন
• খাবার পানি
• মুরগীর ব্যবস্থাপনা
• লিটার ব্যবস্থাপনা
• ফার্মের ব্যবস্থাপনা
• মৃত মুরগী অপসারণ ও ধ্বংস
• পরজীবী দমন
ফার্মের স্থান র্নিবাচন
• যানবাহন চলাচল করে এমন রাস্তা থেকে একটু ভিতরে হতে হবে , যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল
• খামারের স্থানে বিশুদ্ধ পানি এবং বিদ্যুত্ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকতে হবে
• খোলামেলা পরিবেশসহ পর্যাপ্ত আলো বাতাস যুক্ত স্থান হতে হবে
• ভাল বর্জ্যনিষ্কাশন ও ড্রেনের ব্যবস্থা আছে এমন জায়গা বেছে নিতে হবে
শেড নির্মান:
• শেডের বাইরে জায়গা অল্প হলে চারপাশে কাটাতারের বেড়া এবং জায়গা বেশী থাকলে শেড থেকে দুরে চারপাশে নিরাপদ পাকা দেয়াল র্নিমান করতে হবে,যেন মানুষ বা জীবজন্তু প্রবেশ করতে না পারে
• ঘর পূর্ব -পশ্চিমে লম্বালম্বি স্থাপন করে, উত্তর-দক্ষিণ আলো বাতাস চলাচলের জন্য উণ্মুক্ত রাখবে
ধকল প্রতিরোধ:
• ঘরের তাপমাত্রা ১৮- ২৬সে. রাখতে পারলে ভাল হয়
• অতিরিক্ত গরম কমাতে চালায় ঠান্ডা পানি ছিটাতে হবে এবং প্রয়োজনে ধকল প্রতিরোধে র্নিধারিত মাত্রায় ইলেট্রোপ্যাক ও ভিটামিন-সি খাওয়াতে হবে
• ঘরে অযাচিত গ্যাস যেন তৈরি বা জমা না হয় তার ব্যবস্থা রাখতে হবে
• অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে
খাদ্য ব্যবস্হা:
• সুষম খাদ্য দিতে হবে
• খাদ্য উপাদানগুলো পুষ্ট দানার ও শুকনো হতে হবে
• খাদ্য উপাদানগুলোর সংরক্ষণ ভাল হতে হবে
বাতাস:
• ঠান্ডা বাতাস ও ঝড়-বৃষ্টির সময় পর্দা ওপরের দিকে ৬-ঌ ইঞ্চি খোলা রেখে ব্যবহার করতে হবে এবং মাঝে মাঝে পর্দা উঠিয়ে বাতাস বের করে দিতে হবে
• গরম বাতাস রোধে শেডের বাইরে কুয়াশার ন্যায় পানি ছিটাতে হবে
• জায়গা অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমানের বেশী মুরগী রাখা যাবে না
• লিটার শুকনো রাখতে হবে যেন গ্যাস তৈরী না হয়
• ফার্মের আশেপাশে ধূলাবালি থাকবে না
মানুষসৃষ্ট রোগ বা ধকল নিয়ন্ত্রন:
• কর্মরত লোকজন ফার্মে ঢোকার আগে কাপড় বদলে, গোসল করে, শেডের পোশাক শেডে গিয়ে কাজ করবে
• শেডে ঢোকার সময় ভাল জীবানুনাশক দিয়ে শরীর স্প্রে করে, ফুটবাথে পা চুবিয়ে নেবে
• একই লোক দিয়ে বাচ্চাসহ ২/৩ শেডে কাজ করাতে হলে প্রথমে বাচ্চাতে, পরবতীতে ক্রমানুসারে বেশী বয়সের শেডে কাজ করবে এবং পরিচর্যাকারী সবশেষে রোগাক্রান্ত শেডে কাজ করবে
• দশনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ ৷ যদি তাদের প্রবেশ দিতেই হয় তাহলে পরিস্কার-পরিছন্ন ও জীবাণুমুক্ত হতে হবে
খাবার পানি:
• পানির তাপমাত্রা১৫- ২৫ সে. এর মধ্যে রাখতে হবে
• ময়লা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে ২৪ ঘন্টায় অন্তত চারবার পানি দিতে হবে
মুরগীর ব্যবস্থাপনা:
• পানি ও খাবার দেয়ার পরে সেগুলোর দিকে মুরগীর যাওযার আগ্রহ ,হঁাটার ধরন লক্ষ্য করতে হবে
• মুরগীর চোখ-মুখ ,ঝুটি বা পায়ের রং পরীক্ষা করতে হবে
লিটার ব্যবস্থাপনা:
• ধানের তুষ লিটার হিসাবে ব্যবহার করা ভালো
• লিটার সবসময় শুকনো রাখতে হবে , তবে ধুলা উড়ে এমন শুকনো যেন না হয়
• বাচ্চা যেন লিটার না খেয়ে ফেলে সে দিকে নজর দিতে হবে
ফার্মের ব্যবস্থাপনা:
• মুরগীর বয়স ও সংখ্যা অনুযায়ী খাদ্য ও পানির পাত্রের আকার, সংখ্যা ও স্থান নির্ধারন করতে হবে
• পরিস্কার পানি দিয়ে ধোয়ার পরও জীবাণুনাশক দিয়ে পানির পাত্র প্রতিদিন এবং খাদ্যপাত্র ২/৩ দিন অন্তর পরিস্কার করতে হবে
• ডিমের বাক্স, খাচা, ট্রলি ইত্যাদি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত করে শেডে ঢোকাবেন
bio safety
• মৃত মুরগী ফার্ম থেকে দূরে নিয়ে পুড়িয়ে মাটির নীচে গর্ত করে রাখতে হবে
• ফার্মের আশেপাশে কোন মরা জীবজন্তু যাতে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে

কৃষির আরো খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিনঃকৃষিসংবাদ.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *