কৃষি সংবাদ ডেস্ক
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ফার্মগেটস্থ খামার বাড়িতে আয়োজন করা হয় তিন দিন ব্যাপী জাতীয় ফল মেলা ২০১৮ । গত শুক্রবার থেকে রবিবার টানা তিন ব্যাপী ফল মেলার গতকাল ছিল সমাপনী দিবস। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘অপ্রতিরোধ্য দেশের অগ্রযাত্রা, ফলের পুষ্টি দেবে নতুন মাত্রা’ এ প্রতিপাদ্যে রোববার আ.কা. মু গিয়াস উদ্দিন মিলকী অডিটোরিয়ামে পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে এ আয়োজন সম্পন্ন হয়।
উক্ত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ উইং) সৈয়দ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ অমিতাভ দাস। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান।
ফল প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী স্টল, ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী উপলক্ষে কৃষক, প্রতিষ্ঠান পর্যায় ও সর্বোচ্চ ফলজ বৃক্ষ রোপনকারী জেলাকে পুরস্কৃত করা হয়। জাতীয় ফল প্রদর্শনীতে আম, কাঁঠাল, কলাসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বাহারি ফল প্রদর্শনের জন্য সরকারি স্টল হিসেবে প্রথম স্থান অর্জনকারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরকে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)। তৃতীয় স্থান অর্জন করে যৌথভাবে কৃষি তথ্য সার্ভিস, কৃষি বিপণন অধিদফতর ও হর্টেক্স ফাউন্ডেশন।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরীতে মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে যথাক্রমে সুপার চেইন শপ আগোরা, মায়ের দোয়া নার্সারি ও ভাই ভাই ফল বিতান (রিপন)। ব্যক্তি পর্যায় ক্যাটাগরীতে খুলনার শেখ শাখাওয়াত হোসেন, চট্টগ্রামের মো. কামাল উদ্দিন ও রংপুরের মথুর চন্দ্র বর্মন যথাক্রমে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করেন। ছাদ বাগান বর্ত্মান সময়ে অতি প্রয়োজনীয় একটি অনুসংগ। সে হিসেবে ঢাকা শহরে বাড়ির ছাদে ফল বাগান সৃজনে বিশেষ সফলতার জন্য পুরস্কার পান কদমতলীর মনি মালা মণ্ডল, আদাবরের আব্দুল গণি তালুকদার এবং আফরোজা আক্তার, শাহবাগের মো. আনোয়ার হোসেন ও তেজগাঁয়ের সিদ্দীকা বেগম।
অন্যদিলে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে খাগড়াছড়ির এডহক ফরমেশন রিক্রুট ট্রেনিং সেন্টার (এএফআরটিসি) ও খুলনার জনতা বহুমুখী সমবায় সমিতিকে পুরস্কৃত করা হয়। সর্বোচ্চ ফলদ বৃক্ষ রোপণকারী জেলা হিসেবে কুমিল্লা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা যথাক্রমে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করে। ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী উপলক্ষে রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১৫ জন ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়।
এবারের ফল প্রদর্শনীতে ৯টি সরকারি ও ৫১টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮১টি স্টল ছিলো। আমের ১০২টি জাতসহ ৯৯ প্রজাতির ফল প্রদর্শিত হয়। এর মধ্যে ছিলো প্রচলিত ৫৪, অপ্রচলিত ৩৬ ও বিদেশি ফলের ৯টি জাত। প্রদর্শনীতে জাতীয় ফল কাঁঠালের একটি বিশেষ কর্ণারে কাঁঠাল দিয়ে তৈরি ১২৩ রকমের মুখরোচক খাবার প্রদর্শন করা হয়।
আয়োজকদের মতে , এবারের ফল মেলায় আমসহ অন্যান্য ফলের ৫০ লাখ টাকার অধিক ৮০ টন ফল বিক্রি হয়। সমাপনী দিবসে উপচে পড়া ভীড় ও অনেককে আম লিচু কাঁঠাল কিনতে দেখা গেছে।