আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ *
বাঁশ পরিচযার মূখ্য বিষয় হলো যতাযথ ভাবে ঝাড় থেকে বাঁশ কাটা বা আহরণ করা । এক্ষেত্রে কিছু রীতি অনুসরন করা হয়। যে সব বাঁশ ঝাড় তৈরী করে সেসব বাঁেশর ক্ষেত্রে কখনোই ঝাড়ের গঠন বৃত্তাকার বা গোলাকার হতে পারবেনা । এমন হলে বুঝতে হবে ঝাড়ের মাঝখান থেকে পুরানো বাঁঁশ কাটা হয়নি বা আদৌ ঝাড় থেকে বাঁশ কাটা হয়না । নিয়মিত বাঁশ কাটা হলে ঝাড়ের গঠন হবে ঘোড়ার খুরের মতো।
বাঁশ তিন বৃওে পরিপক্কতা অর্জন করে। তিন বছরের চেয়ে বেশি পুরানো বাঁশ ঝাড়ে রেখে দিয়ে নতুন বাঁশ কাটা মোটেই উচিত নয়। কারন পুরানো বাঁশ থেকে নতুন কোড় উৎপন্ন হতে পারে না। বাঁশ ঝাড় থেকে নতুন বাঁশ (১ থেকে ২ বছর ) আহরন করা মোটেই উচিত নয়। কারণ নতুন বাঁশ অপরিপক্ক ও দূর্বল। তাছাড়া নতুন বাঁশ থেকে পরবর্তি বছরে সবচেয়ে বেশি কোড় ও ভালো বাঁশ উৎপন্ন হয়। একটি ঝাড়ে কমপক্ষে ৯ টি নতুন বাঁশ থাকলে সে ঝাড় থেকে পরবর্তি বছরে সবচেয়ে বড়ো বাঁশ উৎপন্ন হতে পারে ।
ঝাড় থেকে পুরানো বাঁশ আগে- ভাগে কেটে নিয়ে ফাঁকা করে দেয়া প্রয়োজন। ঝাড়ে বাঁেশর ঘনত্ব বেশি থাকলে নতুন বাঁশ জন্মাতে পারে না। প্রতি হেক্টরে কমপক্ষে ২,৫০০ টি বাঁশ রেখে পাতলা করা উচিত। এশাধারে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে ঝাড় থেকে বাঁশ না কেটে প্রতি বছর বা ২ বছর অন্তর ঝাড় থেকে পুরানো বাঁশ গুলো কেটে পাতলা করলে ভালো ফলন হয়। বসন্তকাল থেকে শুরু করে সর্ম্পূন বর্ষাকাল পর্যন্ত ঝাড় থেকে বাঁশ কাটা মোটেই উচিত নয়, তাতে নতুন বাঁশের উদগম ও পরবর্তিতে উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ সময় ব্যতীত অন্যান্য সময়ে বাঁশ কাটা যায়। তবে সারা বছরই সাবধানে দু একটি করে পুরানো বাঁশ আহরণ করা যেতে পারে।
ঘন সন্নিবিষ্ট গোলাকার ঝাড়ের ক্ষেত্রে ইংরেজি এম অথবা ঘোড়ার খুরের আদলে ঝাড়ের মাঝখান থেকে পুরানো বাঁশগুলো আগে কাটাই বাঁশ আহরণের রীতি। মাঝখানের বাঁশ কেটে সহজেই রের করার জন্য আগেই কঞ্চি ছেটে নেয়া যায়। হেলানো বাঁেশর বেলায় প্রথমে নিচের দিকে অর্ধেক কেটে নিয়ে পরে উপরের দিকে কাটলে বাঁশ ফেটে যাবে না। মসৃন করে বাঁশ কাটতে হয় এবং ঝাড়ের কাটা কঞ্চি সরিয়ে ফেলতে হয়। গোড়ায় মাত্র ১টি গিট রেখে দিয়ে বাঁশ কাটা উচিত। ঝাড় থেকে বাঁশ কাটার পরবর্তি বছরেই মাটি খুড়ে মোথা ও সংযোগ অপসরণ করা উচিত । ঝাড়ে মরা অথবা সামান্য তাজা মোথা রাখা উচিত নয়। এতে নতুন বাঁশ উদগম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। মোথা তোলার পর ঝাড়ে পর্যাপ্ত মাটি দেয়া আবশ্যক।
* লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ,
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।