বশিরুল ইসলাম
হাইড্রোপনিক্স ফসল উৎপাদন
গাছের ১৬ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নিয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী একটি দ্রবণ তৈরি করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহিদুর রহমান। উদ্ভাবিত এ দ্রবণটি সঠিক পরিমাণে সরবরাহ করা গেলে প্রতিটি গাছ থেকে মাঠ ফসলের চেয়ে ৮-১০ গুণ বেশি ফলন পাওয়া যাবে বলে জানান উদ্ভাবক ড. জাহিদ। গতকাল (২৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে সেমিনার রুমে ‘বাংলাদেশে টেকসই হাইড্রোপনিক্স ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. জাহিদুর রহমান। এতে তিনি বলেন, হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন খুবই লাভজনক। কিন্তু হাইড্রোপনিক্স পদ্ধতিতে চাষের উপযোগী একটি কাঠামো তৈরি একটু ব্যয়বহুল। বিশটি গাছ চাষ করা যাবে এমন কাঠামো দাঁড় করাতে প্রায় বিশ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হবে। তবে, এসব কাঠামো প্রায় বিশ থেকে ত্রিশ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। আবার ফলনও অনেক বেশি হয়।
তিনি আরও বলেন, উদ্ভাবিত পুষ্টি দ্রবণ ব্যবহার করে টমেটো, ক্যাপসিকাম, মরিচ, করলা, লেটুস, শশা, কলা, ঢেঁড়স ও বিভিন্ন শাকজাতীয় সবজির ফলন মাঠের চেয়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে আমাদের গবেষণায়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল হক বেগ। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক,কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত হাইড্রোপনিক্স চাষিরা। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কৃষি অনুষদের ডীন প্রফেসর রুহুল আমিন।
প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, এ চাষ পদ্ধতিতে ঢাকা শহরের বাসিন্দারা খুব সহজেই বাড়ির ছাদে কিংবা ঘরের ভিতরে সবজি ও ফুল চাষ করতে পারবেন। আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাচ্ছি। শুধু ভাত ও আলু ভর্তা দিয়ে পেট ভরলেই চলবে না। নিশ্চিত করতে হবে পুষ্টিকর খাদ্যের।
উদ্ভাবিত দ্রবণের মূল্যের বিষয়ে ড. জাহিদুর রহমান বলেন, বর্তমানে অনেকেই হাইড্রোপনিক্স চাষ পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন। কিছু বিজনেস কোম্পানি দ্রবণের দাম অনেক বেশি রাখছেন। তবে আমাদের কাছে প্রতি লিটার ৩০ টাকাতেই পাওয়া যাবে।
লেখকঃ
জনসংযোগ কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত)
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়