হাবিপ্রবির ছাত্র-শিক্ষক
নিজস্ব প্রতিনিধি।। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে হাবিপ্রবির ছাত্র-শিক্ষক ও দুই কর্মচারীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ৪৮তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড.মো.রমজান আলীকে ছাত্রী যৌন হয়রানির অপরাধে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত এবং অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের মার্কেটিং বিভাগের লেভেল-৪ সেমিস্টার-২ এর শিক্ষার্থী আলমগীর কবিরকে দুই সেমিস্টারের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম এবং আবাসিক হল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া রিজেন্ট বোর্ডের ওই সভায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করার অপরাধে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৌরভ পাল চৌধুরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিন এন্ড আপিল রুলস অনুসারে পরবর্তী উচ্চতর পদে পদোন্নতি বা পর্যানোন্নয়ন তিন (৩) বছর স্থগিত করা হয়। হুবহু একই প্রশ্নপত্রে দুই (২) বৎসর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা গ্রহণের অভিযোগে পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম হতে দুই (২)বছর বিরত রাখা এবং স্বীয় বিভাগের অধ্যাপক মো.কুতুব উদ্দিন এর সাথে অশালীন ও অনাকাঙ্খিত আচরণের অভিযোগে কঠোরভাবে সতর্ক করে দেয়া হয়।
একই রুলসে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড.মো.সফিউল আলম (সাবেক)এর টেবিলে আঘাত করে কাঁচ ভেঙ্গে ফেলার অপরাধে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো.আব্দুর রশীদকে ১ জুলাই ২০২০ ইং তারিখে প্রাপ্য বার্ষিক বর্ধিত বেতন স্থগিত রাখা হয় এবং শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের পরিচালকের পদে দায়িত্বে থাকাকালীন ৪(চার) লক্ষ টাকা অগ্রিম গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে সমন্বয় না দেওয়ায় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে আনীত অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী উচ্চতর পদে পদোন্নতি বা পর্যান্নোয়ন স্থগিত করা হয়।
একই সাথে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত তথ্য প্রমাণ ছাড়াই নিয়োগে অনিয়ম ও বানিজ্য হয়েছে মর্মে অভিযোগ তুলে ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রদানের অপরাধে বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের জুনিয়র ক্লার্ক কবিতা রায়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিন এন্ড আপিল রুলস অনুযায়ী অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তদন্ত কমিটির সুপারিশে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং একই রুলসে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র ল্যাব টেকনিশয়ান মো.আমিনুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রুজু করা মামলার চার্জশিট না হওয়া পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা-২০২০ চলাকালীন দায়িত্ব পালন অবস্থায় অসদুপায় অবলম্বন করার দায়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা.মো.ফজলুল হক (মুক্তিযোদ্ধা)বলেন,রিজেন্ট বোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম।এখানে সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিগণ মেম্বার হিসেবে থাকেন।রিজেন্ট বোর্ডে কোন বিষয় উপস্থাপন হলে,সে বিষয়ে মেম্বাররা সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে তারপর সিন্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
তিনি আরও বলেন,কেউ তো চায়না কারো শাস্তি হোক।কারণ শাস্তি কথাটাই তো খারাপ। কিন্তু যখন মানুষ অপরাধ করে,তখন তার শাস্তি আরোপ করা হয়।কারন একজন মানুষের অপরাধের কারনে তাকে শাস্তি দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে সতর্ক করে দেয়া হয়।যাতে অন্যরা বুঝতে পারে যে অপরাধ করলে তাকেও এই শাস্তি দেয়া হবে। অপরাধীর অপরাধের শাস্তি হোক এটা সবাই চায়।অপরাধী যেই হোক তাকে শাস্তি পেতে হবে,আর এটাই হওয়া উচিত।তা’না হলে অপরাধকারীদের মধ্যে কোন ভয়-ভীতি থাকবে না ফলে অপরাধের মাত্রা এবং বিশৃংখলা আরও বেড়ে যাবে।
উল্লেখ্য যে,রিজেন্ট বোর্ডে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মনোনীত জাতীয় সংসদের দুইজন,সরকার মনোনীত যুগ্ম-সচিব পদ মর্যাদার দুইজন,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হতে সরকার কর্তৃক মনোনীত ৩ জন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর মনোনীত ৩ জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ বোর্ডের সদস্য হিসেবে থাকেন।